বাংলাদেশে শুভা ছড়াবে নেদারল্যান্ডের ফুল লিলিয়াম

নিজস্ব প্রতিবেদক:

লালতীর সীড বাংলাদেশের মানুষের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে ইউরোপের প্রসিদ্ধ ও সুগন্ধী লিলিয়াম ফুলের। যা দেশের ফুল প্রেমীদের জন্য এক শুভবার্তা। একই সাথে এটি দেশের বানিজ্যিক অগ্রগতিরও ধারক হবে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক গতি বৃদ্ধিতে লালতীর সীড এর অসামান্য অবদান রয়েছে। ধান থেকে শুরু করে দেশীয় সকল প্রকার শাক-সবজী ও ফলমুল এর উন্নত ও উচ্চ ফলনশীল জাত এর বীজ আবিস্কার করে ইতিমধ্যে যে প্রতিষ্টানটি সফল কৃষক বান্ধব প্রতিষ্টানে রুপ নিয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে মাল্টিমুড গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল আওয়াল মিন্টু, মাল্টিমুড গ্রুপ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাজওয়ার এম আওয়াল সহ প্রতিষ্টানটির সহস্রাধিক কৃষি গবেষক, ব্যাবস্থাপক ও মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দরা এখন দেশের  কৃষকদের কাছে কৃষক বান্ধব হিসেবে খ্যাত। এর মধ্যে মাল্টিমুড গ্রুপ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাজওয়ার এম আওয়াল যার ধ্যান ধারণা মিশে আছে মাটির সাথে। যিনি দেশের এতো উচ্চ পর্যারে একজন ব্যক্তিত্ব, শিক্ষাগত ক্ষেতে সর্বোচ্চ ডিগ্রী অর্জন করেছেন। চাইলে তিনি উন্নত দেশে গিয়ে আধুনিক ব্যবসা বানিজ্য করে লাক্সারি লাইফ কাটাতে পারেন। কিন্তু এই মানুষটির পরিচয় এখন মাটির কারিগর। এমন কোন সাপ্তাহ নেই যে তাঁর পদাচারণা পরে না প্রত্যন্ত গ্রামের কৃষকের ক্ষেতে।


বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির কথা চিন্তা করে তাজওয়ার এম আওয়াল বিগত কয়েক বছর ধরে ইউরোপের জনপ্রিয় ফুল লিলিয়াম নিয়ে গবেষনা শুরু করেন। নেদারল্যান্ড থেকে বীজ এনে বাংলাশের মাটির সাথে এর ম্যাচ হবে কিনা শুরু করেন পরীক্ষা নিরিক্ষা। নিজস্ব পরীক্ষায় পর তিনি এর সফলতার মূখ দেখেন। এর ফলশ্রুতিতে তিনি পরীক্ষামূলকভাবে দেশের বিভিন্ন এলকায় নার্সারী মালিকদের দিয়ে প্রদর্শনী প্লট করেন। আর এই ডিসেম্বরে দেশের বেশ কয়েকটি প্রদর্শনী প্লটে লেগেছে লিলিয়ামের রং এর ছোয়া। ছড়াচ্ছে তার মিষ্টি সুগন্ধ। এখন এই লিলিয়ামের রঙ্গিন স্বপ্নে বিভোর চাষীরাও। যাদের স্বপ্নদ্রষ্টা তাজওয়ার এম আওয়াল। তিনি স্বপ্ন বুনছেন দেশের পাশাপাশি এটি রপ্তানী করবেন মধ্যপ্রাচ্যে। যার থেকে বাংলাদেশ আয় করবে বৈদেশিক মুদ্রা। ইতিমধ্যে মৌলভীবাজারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নার্সারী মালিকদের দিয়ে পরীক্ষন প্লট তৈরী করেছেন। এর মধ্যে দেশের বেশ কিছু জায়াগায় এর ফুল ও কলি এসেছে। কাছাকাছি সময়ে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায়ও ফুল ফুটবে বলে জানান লালতীরের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক তাপস চক্রবর্তী। সম্প্রতি সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জের সায়েস্তাগঞ্জের জগৎপুর গ্রামে প্রদর্শনী প্লটে ফুল ও কলি আসায় লাল তীর সীড কোম্পানীর  উদ্যাগে লিলিয়াম ফুলের কৃষক মাঠ দিবস অনুষ্টিত হয়। এ সময় নার্সারীম্যান মো. সাদিকুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লাল তীর সীড কোম্পানী লিঃ এর  ডিভিশনাল ম্যানেজার তাপস চক্রবর্তী,  বিশেষ অতিথি  ছিলেন রিজওনাল ম্যানেজার কৃষিবিদ গোলাম আজম,  উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আলী হোসেন, ডেপুটি ম্যানেজার পিডিএস মাহমুদুল হাসান,  টিএম স্বপন কুমার সিং,  হবিগঞ্জ প্রমুখ । উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে লাল তীর সীড লি: এর ডিভিশনাল ম্যানেজার তাপস চক্রবর্তী বলেন, বাংলাদেশের ফুলের জগতে লালতীরের নতুন সংযোজন লিলিয়াম ফুল, যা বিদেশ থেকে আমদানী করে আনতে হয়। সেইক্ষেত্রে লালতীর এবং মাল্টিমোড গ্রুপের পরিচালক তাজওয়ার এম আউয়াল এর মূল লক্ষ্য বা স্বপ্ন বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় লিলিয়াম ফুলের চাষ এবং নতুন বাজার সৃষ্টি করা তার জন্য এই প্রদর্শনী। নার্সারী ও কৃষক পর্যায়ে প্রদর্শনী স্থাপন করেছেন। তিনি বলেন, সেই প্রদর্শনীর ফলাফল হচ্ছে এটি বেশ চমকপ্রদ ও আকর্ষনীয় ও দৃষ্টিনন্দন। বাংলাদেশের  সকল  জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে  উন্নতমানের লিলিয়াম ফুলের চাষ করে বানিজ্যিকভাবে  সাধারণ কৃষক যেন সাবলম্বী হতে পারে এবং সফলতা অর্জন করতে পারে। এই লক্ষ্যে তাজওয়ার এম আউয়াল নেদারল্যান্ড থেকে এর বীজ এনে পরীক্ষার পর সারা দেশে বিনা মুল্যে বিতরণ করেছেন। আর ফুল আসা ও মাঠ তৈরীর পর বিভিন্ন মাঠে তিনি সরজমিন  পরিদর্শন করেন।

তাপস চক্রবর্তী আরো বলেন, বাংলাদেশের  অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে এবং এদেশের উন্নয়ন সাধিত হবে এবং নতুন প্রজন্ম বা ফুলপ্রেমীদের বিষয় টি শুভবার্তা বয়ে আনবে এবং বর্তমান ডিজিটাল স্যাটেলাইট যুগে হারিয়ে যাওয়া ফুলের ঐতিহ্য পুবরায় ফিরে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মশিউর রহমান বলেন, লিলিয়াম ফুলের মাঠ দেখে আমরা আনন্দিত।  লিলিয়াম ফুলের রেজাল্ট খুবই চমৎকার। এগুলো বাজারে আসলে ক্রেতার চাহিদা মেটাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। মাল্টিমুড গ্রুফ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাজওয়ার আউয়াল বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি বিদেশিদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কৃষকদের সবজীসহ নানা কৃষিপণ্য উৎপাদনে এগিয়ে নিতে। এ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। সম্প্রতি লেদারল্যান্ড থেকে লিলিয়াম ফুলের বাল্ব (কন্দ) এনে চাষিদের দেয়া হয়েছে।
অল্প দিনের মধ্যে ভালো উৎপাদন হওয়ায় বিদেশি জাতের লিলিয়াম ফুলের সম্ভাবনা দেখা গেছে।’ এর চাষ দেশব্যাপী বিস্তার করতে পারলে এক দিকে যেমন এই ফুলের আমদানী করতে হবে না বরং মধ্যপ্রাচ্যে তা রপ্তানী করে আমরা বৈদেশক মুদ্রা অর্জন করতে পারবো।এ ছাড়াও বাঘের হাটের মোল্লার হাট, খুলনা, যশোর, সিলেট ও গাজীপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় এই ফুলের পরীক্ষন প্লট করা হয়েছে এবং অনান্য জায়গাও প্রকৃয়াধীন। লিলিয়াম সাধারণ, শীত প্রধান দেশগুলোতে সাদা, হলুদ, কমলা, গোলাপি, লাল ও বেগুনি বর্ণ নিয়ে ফুটতে দেখা যায়।  ফুলের বর্ণচ্ছটা অনেকটা আকর্কশনীয় এবং চোখের পুঁতি স্থির করার মতো। এর গায়ে এতো সুন্দর অঙ্কন যা দেখলে মনে হবে কোনো শিল্পী তার ফুলের গায়ে নানা রং দিয়ে চিত্র এ্যাঁকে রেখেছেন। পাশাপাশি এর মষ্টি গন্ধ ফুল প্রেমীদের আকৃষ্ট করে।
উল্লেখ এর আগে বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা কেন্দ্র ২০১৫ সাল থেকে এই ফুল নিয়ে পরীক্ষা নিরিক্ষা চালাচ্ছে।

শেয়ার করুন