মোঃফাহিম মোল্লা , প্রতিনিধি
চরফ্যাসন (ভোলা): ভোলার চরফ্যাসনে মো. রায়হান (১৮) নামের এক কলেজ ছাত্র পরিত্যক্ত পলিথিন ও প্লাস্টিক পুড়ে তৈরি করছেন জ্বালানি তেল ডিজেল, অকটেন, পেট্রোল। তার এ তৈরি করা জ্বালানি তেলের মেশিন ও তেল দেখতে বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন এলাকাবাসী। এতে এলাকাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। রায়হান উপজেলার দক্ষিণ আইচা অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। এবং চরমানিকা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের চরকচ্ছপিয়া গ্রামের মো. দ্বীন ইসলাম মুন্সীর ছেলে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রায়হান বাড়ির পাশে খালি জায়গায় একটি ড্রাম বসিয়ে তৈরি করেন জ্বালানি তেল তৈরির মেশিন। এরপর পরিত্যাক্ত ও পরিবেশ নষ্টকারী পলিথিন কুড়িয়ে এনে ওই মেশিনে বা ড্রামে বিশেষ প্রক্রিয়ায় পলিথিন আগুনে তাপদেন। আগুনের তাপে ড্রাম থেকে নির্গত বায়ো গ্যাস পাইপ দিয়ে এসে প্লাস্টিকের ড্রামের মধ্যে রাখা পানিতে ঠান্ডা হয়ে ছোট ৪ টি কন্টেইনারে জমা হচ্ছে ওইসব জ্বালানি তরল পদার্থ। যা ৪টি কন্টেইনারের মধ্যে একটিতে বেরিয়ে আসে ডিজেল, অন্যটিতে পেট্রোল, অন্য আরেকটিতে অকটেন, এবং বায়োগ্যাস। এসব জ্বালানি তেল মাটিতে ফেলে আগুন জ্বালিয়ে তা তরল পদার্থ যে প্রমাণ করেছেন কলেজ ছাত্র রায়হান। কলেজ ছাত্র রায়হান জানান, ইউটিউবে ভিডিও দেখে হাট বাজার থেকে পরিত্যাক্ত পলিথিন সংগ্রহ করে পরীক্ষামূলকভাবে নিজ বাড়ির উঠানে একটি তাপ সহনশীল ড্রাম, ৪ টি কন্টেইনার, একটি ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের পাইব ড্রামে লাগিয়ে কাজ শুরু করি। পরে ওই ড্রামে পলিথিনের কুন্ডলী বানিয়ে মুখ বন্ধ করে নিচে আগুনের তাপ দিয়ে দেখি পলিথিন গলে ডিজেল, অকটেন, পেট্রোল, ও বায়োগ্যাস তৈরি হচ্ছে। তা আমি আগুনে জ্বালিয়ে প্রাথমিক ভাবে পরিক্ষা করেছি। কলেজ ছাত্র রায়হান আরো জানান, বর্তমানে এক লিটার ডিজেল, অকটেন, পেট্রোল তৈরিতে খরচ হচ্ছে ১০-১৫ টাকা। আমি সরকারি কোনো সহায়তা পেলে এই প্রযুক্তির সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন ঘটিয়ে প্লাস্টিক বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং তা থেকে তেল উৎপাদনের মাধ্যমে জ্বালানির চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে জানান ওই কলেজ ছাত্র রায়হান। স্থানীয় আল-আমিন, ও আব্বাস জানান, বিভিন্ন স্থানে প্লাস্টিক বর্জ্য ও পলিথিন জমিতে মিশে মাটির উর্বরতা কমিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ফসল ও পরিবেশের দূষণ করছে। সম্প্রতি কলেজ ছাত্র যুবক রায়হান ফেলে দেওয়া এসব বর্জ্য থেকে পেট্রোল ও ডিজেল তেল উৎপাদন করে দেশের বিরাট উপকার করবে। এটা স্থানীয়দের জন্য গর্বের বিষয়। সরকারিভাবে তাকে সহযোগিতা করা হলে দেশের তেল ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ থেকেও বাঁচা যাবে বলে জানান তারা। উপজেলার চরমানিকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.নিজাম উদ্দিন রাসেল বলেন, রায়হানের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। আমরা তার এ কাজকে আরও বেগবান করতে পরিষদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করবো।