সিলেটে ‘মাউশি’র নীতিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রধান শিক্ষক হলেন জসীম উদ্দিন!

সিলেট প্রতিনিধি:

সিলেট সদর উপজেলার আওতাধীন আল আমীন জামেয়া ইসলামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জসীম উদ্দিন নিয়মবর্হিভূত দায়িত্ব পালনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এনিয়ে স্থানীয় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, ২০০৬ সালের আগে তিনি খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে অত্র বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ২০০৮ সালের পহেলা জুন সরকারী নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ভাগিয়ে নেন প্রধান শিক্ষকের আসন। তার পেছনে নেতৃত্ব দেন ওই বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি প্রভাবশালি ব্যক্তি জামায়াত (শিবির) নেতা আব্দুস শাকুর। এতে দেখা যায় ‘মাউশি’র নীতিমালা লঙ্গন করে আলাদিনের চেরাগ হয়ে তিনি তার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। খোজ নিয়ে দেখা যায়, কমিটির সভাপতি শিক্ষক নিয়োগ ক্ষেত্রে কোন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে সিলেটের একাধিক স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ দেখিয়ে নিজের ক্ষমতাবলে শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য ছেড়ে ফেলেন। এছাড়া ২০২০ সালে মাধ্যমিক এমপিও ভূক্ত হলেও আজো পর্যন্ত্য কথিত শিক্ষক জসীম উদ্দিন ‘মাউশি’র নীতিমালা অনুযায়ী কোন আবেদন করেন নি। রহস্যজনক হলেও সত্য যে, গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কতৃক প্রধান শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত একটি তদন্ত রির্পোট প্রকাশ করে। সেই তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায় জসীম উদ্দিন সর্ম্পুন অবৈধ পন্থায় কমিটির সভাপতিকে ব্যবহার করে বিশাল তবিয়তে নিজ দায়িত্ব পালন করছেন। যদিও বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রনালয়ের উর্ধ্বতন কতৃপক্ষসহ অনেকে অবহিত রয়েছেন কিন্তু কোন কিছুকেই তোয়াক্কা করছেননা কথিত শিক্ষক জসীম উদ্দিন। রয়েছে শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও বির্তক। বরং উল্টো ক্ষমতা প্রয়োগ করে সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়ে নিজের আসন ঠেকানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত । অথচ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন থেকে অতি সুনামের সহীত ভালো ফলাফল বয়ে আনলেও শুধুমাত্র প্রধান শিক্ষক ও কমিটির সভাপতির এহেন অপকর্মে সচেতন নাগরীকরা কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন। বিপাকে রয়েছেন বিদ্যালয়ের অভিভাবকসহ শিক্ষার্থীরা। অনেকে মামলা মোকাদ্দমার ভয়ে কথা বলতে নারাজ। তাদের বিরুদ্ধে অনেক বস্তুনিষ্ট সংবাদকর্মীরাও সংবাদ প্রকাশ করতে ভয় পেয়ে থাকেন। অভিযোগ রয়েছে একই কমিটি বার বার ঘুরেফিরে বিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। তারা দু’জন একই সূত্রে যোগসাজশ সর্ম্পক গড়ে তোলে বিদ্যালয়ের অন্যান্য বিষয়াদিও লোকচক্ষু আড়ালে বিভিন্ন কাজকর্ম দেখিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। যদি কোন বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থা দ্বারা সূষ্ট তদন্ত করা হয় তাহলে বেরিয়ে আসবে থলেড় বিড়াল। এবিষয়ে জসীম উদ্দিনের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি একটি মিটিংয়ে আছি, পরে কল দিবেন। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষকের সহীত মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি জানান, জাতীয় পত্রিকার প্রকাশিত নিয়োগকৃত বিষয় নিয়ে তিনি কিছু জানে না। এছাড়া প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বৈধ কি অবৈধ সেই বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি নহে। এ ব্যাপারে সিলেট জেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল ওয়াদুদ’র মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে এনিয়ে তদন্ত করা হয়েছে । বিষয়টি ডিজি স্যার সহ আমাদের উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ অবহিত রয়েছেন। এসময় তিনি বলেন, এমপিও ভুক্তির ক্ষেত্রে যখন তারা সরকারী টাকা নিতে আসবে তখন আমরা বিষয়টি যাচাই-বাচাই করে তাদের টাকা প্রদান করে থাকি। সেই ক্ষেত্রেও আমরা সরকারের নীতিমালা অবলম্বন করবো। অপরদিকে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান ড. রমা বিজয় সরকার’র মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যাপারটি আমি কাগজ না দেখে বলতে পারছি না। তবে কথা বুঝে যা জানতে পারলাম সেটা অবশ্য নীতিমালা লঙ্গন। খুজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি আব্দুস শাকুরের মুঠোফোনে কথা বললে তিনি প্রতিবেদক’কে জানিয়েছেন তিনি তার ব্যক্তিগত ক্ষমতাবলে জসীম উদ্দিনকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব সমজিয়ে দিয়েছেন। অপরএক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এনিয়ে ঢাকায় একটি মামলা করা হয়েছে তবে কোন আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি সদ্বত্তোর দিতে পারেন নি। একাধিকবার তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালনের বিষয়টি এড়িয়ে যান। এসময় তিনি প্রধান শিক্ষকের তদন্তের বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।

শেয়ার করুন